কবিতাগুচ্ছ: লবণ একাদশ। বিজয় দে।
লবণ একাদশ
(বাকি অংশ)
বিজয় দে
প্রয়োজনীয় পরবর্তী
মন যা বলছে বলুক
হৃদয়ের পরবর্তী লাইনগুলি আমাদের লিখে রাখা দরকার
সন্ধেবেলা যে-কথাই হোক
রাত্রির পরবর্তী লাইনগুলি আমাদের লিখে ফেলা দরকার
ক্ষুধা যা বলছে বলুক
লবণের পরবর্তী লাইনগুলি আমাদের লিখে ফেলা দরকার
আমি যেখানেই থাকিনা কেন
আমার পরবর্তী লাইনগুলি এখনই লিখে রাখা দরকার
আমাদের রান্নাঘরে প্রাতঃস্মরণীয় যে লবণের কৌটোটি আছে
লবণের প্রতিটি দানার ভেতরে যে সমুদ্র আছে
সেই সমুদ্রের প্রতিটি ঢেউয়ের কথা লিখে রাখা দরকার
সুন্দর সত্যাগ্রহ
“লবণ তৈরি করো
লবণ প্রস্তুত করো”
একটা স্বাধীন আহ্বানের সাথে প্রতিদিন পা মেলাচ্ছি
একটা তেরঙা দেশের কন্ঠস্বরের সাথে প্রতিদিন গলা মেলাচ্ছি
আর কেউ জানুক-বা-না-জানুক,হৃদয় জানে
আমরা একা নেই,সামনে যিনি সব সময় দাঁড়িয়ে থাকেন
তিনি সুন্দর সত্যাগ্রহ
সমুদ্রের ধারে সুন্দর একা একা একটি নাম মাত্র
সত্যাগ্রহ; আমরা সুন্দরের পাশে একটি উপাধি জুড়ে দিলাম
কাটা-ঘা
শ্রীযুক্ত কাটা-ঘা নামে একজন প্রায়-পর্যুদস্ত কবি...
কাটা-ঘা নামে একজন কবি যে-পাড়ায় বসবাস করেন
ঠিক তার পেছনের পাড়াতেই একজন আছেন , যাকে বলে
অসম্ভব নুনের ছিটা
ভিটা যার যার, সম্পূর্ণ আলাদা।এ’পাড়া ও’পাড়া
তবু্ও তো প্রতিবেশী
“আপনারা কেহ কি কবি কাটা ঘ’য়ের লেখা
আধুনিক কবিতাগুলি পড়িয়াছেন ?”
“পড়েছেন? পড়েছেন?”
এদিকে সবাই জানে্ মাত্র মাত্র একজনই আছেন
যিনি নুনের ছিটা
কিন্তু একজন নুনের ছিটা যখন পাড়ায় পাড়ায়
অনেক নুনের ছিটা হয়ে কবিতার মা-মাসি ...
তখন গোটা কবি-সন্মেলনটি যথেচ্ছ বমি করতে থাকে
আর ঠিক তখনি শ্রীযুক্ত কাটা-ঘা’ কাব্য-সমগ্রের ভেতর থেকে
শুধু মা-মাসিদের ঝগড়া শোনা যায়
মন-লবণ
লবণ কিন্তু এমনি এমনি জল হয়ে যায় না
অপমানে হয়
তুমি গ্রীষ্মকালেও কুয়াশাকে ভিন্ন ভিন্ন বয়ানে প্রেমপত্র লেখো
আর লেখো ; খুব ভালো কথা
অথচ লবণকে শুধু শুধু একলা বসিয়ে রাখো
ইচ্ছার ভেতরে...
সবারই তো মনে মনে লবণ; এ জগৎ যেন নোনা ত্রিভুবন
তবু প্রেমপত্রহীন জীবনে একদিন একটি
অসাধারণ আত্মহত্যাকেও
খুবই সাধারণ জলের মতো বলে মনে হবে
শেষ লাইন
যৌনতা এক ধরনের লবণ; যেমন রবীন্দ্রসঙ্গীত
যেমন তোমার কবিতার প্রথম লাইন
গান যার যার; গান থেকে যে-সমস্ত নৈশকালীন অশ্রুকণা
ঝ’রে পড়ে, এ যেন এক ব্যক্তিগত নুন-ভান্ডার
সমুদ্রের ভেতরে বিস্তৃত যে অশেষ মুদ্রাগুণ
এরকম ’ভাবতে পারি,সংক্ষেপে তার ডাকনাম যেন নুন
মুদ্রাদোষ এক ধরনের লবণ ; যেমন জীবন
এক ধরনের লবণ;যেমন মৃত্যু
যেমন তোমার অগোছালো কবিতার শেষ লাইন
দারুন
ReplyDeleteপ্রণাম বিজয় দা🙏
ReplyDeleteএই লবণ সিরিজটা আমি মোহনদাস কর্মচাঁদ গাঁধীকে পাঠিয়ে দিচ্ছি !
ReplyDeleteDarun
ReplyDeleteকী অসামান্য লেখা
ReplyDeleteখুব সুন্দর।
ReplyDelete